চন্দনাইশ প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের চন্দনাইশে গৃহবধূকে হত্যা না আত্মহত্যা! বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ টি হত্যা না আত্মহত্যা এলাকার মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রবিবার চন্দনাইশ উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পলিয়ার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২০১৯ সালে একই উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়ের ৬নং ওয়ার্ড দক্ষিণ হাশিমপুর ভাণ্ডারী পাড়ার নাছির উদ্দিনের কন্যা মুক্তা আক্তার (২৩) এর সাথে পলিয়া পাড়া নিবাসী সোলাইমানের পুত্র মোঃ পারভেজ (৩৫) এর সাথে ইসলামী শরা-শরিয়ত মতে দু’জন বিবাহ বন্ধনে সামাজিকভাবে আবদ্ধ হয়। পারভেজ একজন দুবাই প্রবাসী। বিয়ের কয়েকমাস পর মুক্তার স্বামী পারভেজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই চলে যান। ইতিমধ্যে তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। যার বয়স আড়াই বছর। পারভেজের স্ত্রী মুক্তা আক্তার (২৩) একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী। প্রায় সময় পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-ঝাটি হতো। গত ৩ মাস আগে মুক্তার স্বামী পারভেজ বিদেশ থেকে বাড়িতে আসে ঘটনার আগের দিন শনিবার স্বামী পারভেজ ছেলেকে মারধরের জন্য মুক্তাকে শাসন করে।
বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য ঘটনার দিন রবিবার মুক্তার শ্বশুর বাড়িতে মুক্তার বাবা-মা ও স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি একটি বৈঠক করেন। বৈঠকের একফাঁকে মুক্তার বাবা নাছির উদ্দীন মেয়েকে শাসন করেন। এতে মুক্তা অপমান বোধ করে বৈঠক ত্যাগ করে নিজ কামড়ায় চলে যান। মুক্তাকে বেশ কিছুক্ষণ না দেখার পর খোঁজা-খুঁজির এক পর্যায়ে নিজ রুমের মধ্যে বিষাক্ত ঔষুধ খেয়ে কাঠের মধ্যে ছটফট দেখতে পেয়ে তড়িগড়ি বাড়ির সকলেই উদ্ধার করে দোহাজারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে মুক্তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পথিমধ্যে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠান, সোমবার রাতে মুক্তার পিতা নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে পারভেজকে ১নং ও শ্বশুর-শাশুড়ি সহ মোট ৩জনকে এজাহারনামীয় আসামী করে চন্দনাইশ থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা দায়ের করেন।
এই ব্যাপারে নাছির উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটিকে হত্যাকান্ড বলে জানান। মুক্তার শাশুড়ি জাহানারা বেগম এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেন।
চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
Leave a Reply